একটি চড়ুই পাখি কবিতার প্রশ্ন উত্তর
একটি চড়ুই পাখি: তারাপদ রায়
চতুর চড়ুই এক ঘুরে ফিরে আমার ঘরেই বাসা বাঁধে।
অন্ধকার ঠোঁটে নিয়ে সন্ধ্যা ফেরে যেই সেও ফেরে;
এ বাড়ির খড়কুটো, ও বাড়ির ধান
ছড়ায় শব্দের টুকরো, ঘর জুড়ে কিচিমিচি গান।
কখনো সে কাছাকাছি কৌতুহলী দুই চোখ মেলে
অবাক দৃষ্টিতে দেখে
হয়তো ভাবে লোকটা চলে গেলে এই ঘর জানলা দোর, টেবিলে ফুলদানি, বই-খাতা
এ সব আমার-ই হবে;
আমাকেই দেবেন বিধাতা।
আবার কার্ণিশে বসে চাহনিতে তাচ্ছিল্য মজার,
ভাবটা যেন- এই বাজে ঘরে আছি নিতান্ত মায়ার শরীর আমার তাই,
ইচ্ছে হলে আজই যেতে পারি
এপাড়ায় ওপাড়ায় পালেদের বোসেদের বাড়ি।
তবুও যায় না চলে এতটুকু দয়া করে পাখি
রাত্রির নির্জন ঘরে আমি আর চড়ুই একাকী।
কবিতার সারাংশ বা ভাববস্তু
এই কবিতায় কবির একাকিত্বের বিষণ্ণতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একটি ছোট্ট চড়ুই পাখির সাহচর্য কবির একাকিত্বকে যেন আরও প্রকট করে তুলেছে। কবি এতটাই একা যে তাঁর বাড়িতে একটি চড়ুইয়ের উপস্থিতিও সহজেই টের পাওয়া যায়। চড়ুই সারাদিন যা যা করে, সে সবই কবি মন দিয়ে লক্ষ করেন। কবি তাঁর কল্পনায় চড়ুইয়ের মনের ভাবনাগুলি নিয়ে জাল বুনতে থাকেন। কবির মনে হয় চড়ুই যেন তাঁকে ছেড়ে যেতে চায় না। সে হয়তো কবির মৃত্যুর পর কবির ঘরদোর সব পাবে বলে ভাবে। আবার কখনও কবির মনে হয় চড়ুই বুঝি তাঁকে অবজ্ঞা করছে। চড়ুই হয়তো ভাবছে নিতান্ত দয়া করেই সে কবির বাজে ঘরে রয়েছে। নয়তো ইচ্ছে করলেই পালেদের, বোসেদের বাড়িতে চলে যেতে পারে। তবুও সে যায় না। কবি আর চড়ুই, দুজনেই একা। তাই দুজন দুজনের একাকিত্ব ভাগ করে নেয়।
Comments
Post a Comment