হারিয়ে যাওয়া কালি কলম: প্রশ্ন ও উত্তর
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনার আলোচনা, ব্যাখ্যা ও প্রশ্নোত্তর
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গদ্য লেখক শ্রীপান্থ তথা নিখিল সরকারের লেখা 'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দশম শ্রেণির পাঠ্যাংশে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই আলোচনায় আমরা উপরোক্ত প্রবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলির আলোচনা করবো।
"আমরা কালি তৈরি করতাম নিজেরাই।" কোন প্রসঙ্গে লেখকের এই উক্তি? লেখকরা কী ভাবে কালি তৈরি করতেন?
উদ্ধৃত অংশটি শ্রীপান্থর লেখা 'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে। পেশায় সাংবাদিক হওয়ার সুবাদে কালি ও কলমের সঙ্গে লেখকের যোগাযোগ ছিলো খুবই ঘনিষ্ঠ। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে কালি কলমের ব্যবহার কমে যাওয়ার কথা বলতে গিয়ে লেখক নিজেদের ছোটোবেলার স্মৃতিচারণ প্রসঙ্গে উদ্ধৃত কথাটি বলেছেন।
ছোটোবেলায় লেখক যখন গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে পড়তেন, তখন নিজেদের লেখার কালি নিজেদেরই বানিয়ে নিতে হতো। সে সময় কালি তৈরি করার একটি প্রথাগত পদ্ধতি ছিলো। একটি ছড়ার আকারে সেই পদ্ধতিটি লোকের মুখে মুখে চলত। ছড়াটি ছিলো এ রকম---
তিল ত্রিফলা শিমূল ছালা
ছাগ দুগ্ধে করি মেলা
লৌহ পাত্রে লোহায় ঘষি
ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসী।
এই ছড়ার অর্থ হল: তিল, ত্রিফলা ও শিমূলের ছালকে ছাগলের দুধে মিশিয়ে লোহার পাত্রে লোহা দিয়ে ঘষতে হবে। এই পদ্ধতিতে যে কালি তৈরি হবে, তা দিয়ে লিখলে পাতা ছিঁড়ে যাবে, তবু কালি ছাড়বে না। কিন্তু এই পদ্ধতিটি বেশ কঠিন। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে লেখকরা সহজ উপায়ে কালি তৈরি করতেন। তখন কাঠের উনুনে রান্না হত। ফলে রান্না করার পাত্রের নিচে ভুসো কালি জমত অনেক। সেই কালি লেখকরা লাউ পাতা দিয়ে ঘষে তুলে নিয়ে তাতে জল মিশিয়ে তাতে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিতেন। যারা একটু বেশি ওস্তাদ, তারা আবার ওই কালিতে পোড়া আতপ চাল গুঁড়ো করে মেশাতেন।
"কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর।" কলমকে তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর বলার কারণ কী?
শ্রীপান্থর লেখা 'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' রচনা থেকে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই অংশে লেখক একটি প্রচলিত ইংরেজি প্রবাদের কথাই বলতে চেয়েছেন। প্রবাদটি হলো "Pen is mightier than the sword." এই প্রবাদের একটি বিশিষ্ট তাৎপর্য আছে। নিচে সেই তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা হলো।
পৃথিবীর ইতিহাসে যত বড় বড় বিপ্লব ও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, সে সবের পিছনেই কলমের ভূমিকা ছিলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কলম বলতে এখানে আক্ষরিক অর্থে 'কলম' নয়। কলম যাঁদের হাতিয়ার, সেই লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের কথাই এখানে বোঝানো হয়। পৃথিবীর প্রতিটি বিপ্লবের ইতিহাসে লেখক, কবি ও সাংবাদিকরা সংগ্রামী মানুষকে নিজেদের রচনার মধ্য দিয়ে প্রেরণা জুগিয়েছেন। অত্যাচারী শাসকের মুখোশ খুলে দিয়েছেন নিজেদের লেখার মধ্য দিয়ে। নিজেদের রচনার সাহায্যে তাঁরা মানুষের মধ্যে গড়ে তুলেছেন সচেতনতা। পরাধীন জাতির বুকে তাঁরা জাগিয়ে তুলেছেন স্বাধীনতার স্বপ্ন। সৈনিকরা লড়াই করেন তরবারি হাতে, লেখক লড়াই করেন কলম হাতে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের লড়াইয়ে কলমের ভূমিকা তরবারির চেয়েও বেশি। এটিই হল উদ্ধৃত কথাটির মূল তাৎপর্য।
আরও যে প্রশ্নের উত্তর দরকার হবে, সেটি কমেন্ট করে জানাও।
আরও পড়ো
Plzz Answers some more questions
ReplyDelete২০২১ সালে যদি কালি কলম না থাকে তাহলে তুমি কি করবে?
ReplyDeleteআমাদের আর কোনোকাজ নেই বলুন এইসব ফালতু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ছাড়া? আমরা কোথায় ভাবছি কিভাবে বাংলা টায় পাস করবো আর ইনি এখানে আলাবাল প্রশ্ন করে যাচ্ছেন। যত্ত সব
ReplyDeleteKali o Kalam bolte ki bujho?
ReplyDelete