কারক | কারক কাকে বলে | কারক চেনার উপায়

 কারক কাকে বলে

বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের সম্পর্ককে কারক বলে। 

যেমন: ছেলেটি সকালবেলা ব‌ই পড়ছে। - এই বাক্যে 'ছেলেটি' পদটির সাথে ক্রিয়াপদ 'পড়ছে'-র সম্পর্ক হল কর্তা সম্পর্ক। অর্থাৎ 'ছেলেটি' পড়ার কাজ সম্পন্ন করছে, তাই ছেলেটি কর্তা। অপর দিকে 'সকালবেলা' পদটি ক্রিয়ার কাজ সম্পাদনের সময় বোঝাচ্ছে, তাই এটির সঙ্গে ক্রিয়াপদের অধিকরণ সম্পর্ক। তাই সকালবেলা পদটির কারক হবে অধিকরণ কারক।

কারকের শ্রেণিবিভাগ

কারক ছয় প্রকার: কর্তৃ কারক, কর্ম কারক, করণ কারক, নিমিত্ত কারক, অপাদান কারক ও অধিকরণ কারক। এ ছাড়া দুটি অকারক পদ আছে: সম্বন্ধ পদ ও সম্বোধন পদ।

কারক চেনার সহজ উপায়

কারক চেনার কিছু সহজ উপায় আছে। এই উপায়গুলি ব্যবহার করে কারক চেনা যাবে, কিন্তু কারকের বিস্তারিত আলোচনা পড়ে নেওয়া দরকার। অন্যথায় ভুল হবার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়।

কর্তৃ কারক চেনার উপায়

ক্রিয়ার কাজ যে করে, সে কর্তা। মনে রাখতে হবে: কর্তা হতে হলে ব্যক্তি বা প্রাণী হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। জড় বস্তুও কর্তা হতে পারে। যেমন: গাছটা দাঁড়িয়ে আছে। বাতাস ব‌ইছে। আগুন জ্বলছে। রাস্তাটা বাঁক নিয়েছে। এইসব বাক্যে গাছ, বাতাস, আগুন, রাস্তা প্রাণী না হলেও কর্তা।

কর্ম কারক চেনার উপায়

কর্ম কারক চেনার জন্য ক্রিয়াকে কী বা কাকে দিয়ে প্রশ্ন করতে হয়, কিন্তু এই পদ্ধতিতে একটি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। সতর্কতাটি হল: প্রশ্ন করার আগে বাক্যের কর্তাটি বের করে নিন। কর্তা নির্ণয় না করে কর্ম নির্ণয়ের চেষ্টা করলে ভুল হতে পারে। যেমন: নদী বয়ে চলেছে। - এই বাক্যে আমরা যদি প্রথমেই প্রশ্ন করি "কী বয়ে চলেছে?" তাহলে উত্তর আসবে নদী। নদী কি তবে কর্ম? নদী তো আসলে কর্তা। বয়ে চলার কাজটি কে করছে? নদীই করছে। এখন আগেই যদি আমরা কর্তাটি নির্ণয় করে নিই, তাহলে এই ভুলটি হবে না।

করণ কারক চেনার উপায়

সহায়ক যন্ত্র, কারণ, উপায়, উপকরণ, লক্ষণ বোঝালে এবং কোনো কাজ করতে যতটা সময় লাগে তা বোঝালে করণ কারক হয়।

নিমিত্ত কারক চেনার উপায়

কী জন্য, কার জন্য, কী উদ্দেশ্যে প্রশ্নের উত্তর নিমিত্ত কারক হয়। তোমার জন্য জামা কিনেছি। কার জন্য? তোমার। তোমার নিমিত্ত কারক।

অপাদান কারক চেনার উপায়

কোথা থেকে, কী থেকে, কখন থেকে প্রশ্নের উত্তর অপাদান কারক হয়। যেমন: তিলে তেল হয়। কী থেকে তেল হয়? তিলে। এইখানে একটু ভেবে চিন্তে প্রশ্ন করতে হবে।

অধিকরণ কারক চেনার উপায়

কোথায়, কখন, কীসে প্রশ্নের জবাবে যা পাওয়া যায়, তা সাধারণ ভাবে অধিকরণ হয়। যেমন: ঋষিমশাই ধ্যানে মগ্ন। কীসে মগ্ন? ধ্যানে। ধ্যানে অধিকরণ।

কর্তৃ কারকের শ্রেণিবিভাগ

উক্ত কর্তা: কর্তৃ বাচ্যের কর্তাকে উক্ত কর্তা বলে‌। যেমন: ছেলেরা খেলছে।

অনুক্ত কর্তা: কর্মবাচ্য ও ভাববাচ্যের কর্তাকে বলে অনুক্ত কর্তা। যেমন: আমার যাওয়া হবে না। 

Comments

Post a Comment

Popular Posts